ঢাকা,বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪

চকরিয়ায় রক্তাক্ত ভারসাম্যহীন লোকটির পাশে মানবিক পুলিশ!

মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া ::
মুখে প্রচন্ড আঘাতের চিহ্ন। কয়েকদিন আগের রক্তাক্ত শরীর নিয়ে মাঠে-ময়দানে ঘুরছিল মানসিক ভারসাম্যহীন লোকটি। আঘাতের রক্ত শুকিয়ে মুখের সাথে একাকার হয়ে গেছে। এমনই অবস্থায় মহাসড়ক কিনারায় বুধবার (৩ নভেম্বর) সকালে তার সাক্ষাৎ মিলে কক্সবাজারের চকরিয়ার মালুমঘাট হাইওয়ে থানার মানবিক পুলিশ টিপু রায়ের সাথে।
উপপরিদর্শক টিপু এ বিষয়ে চকরিয়া নিউজকে জানান, মোবাইল ডিউটি পার্টির সাথে ডুলাহাজারা বাজারের দিকে যাচ্ছিলাম। থানার দক্ষিন পাশে দেখি ব্রীজের উপর এক মানসিক ভারসাম্যহীন বয়স প্রায় ২৭ বছরের এক ব্যক্তি বসে আছেন। কাছে গিয়ে দেখি তার মাথা ও মুখে প্রচুর রক্তক্ষরন হচ্ছিল। তা শুকিয়ে গিয়ে মুখের সাথে লেগে আছে। আমার মনে হয় কয়েকদিন আগে কোন মানুষ রুপি জানোয়ার এ ভারসাম্যহীন মানুষটিকে লোহার বস্তু দিয়ে উপুর্যুপরি আঘাত করেছে। এমতাবস্থায় তাকে হাসপাতাল যাওয়ার কথা বললে সে সম্মতি জানায়। লোকটিকে তাৎক্ষণিক স্থানীয় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক সংলগ্ন প্রাইভেট হাসপাতাল এএমএইচ-এ নিয়ে গিয়ে ভর্তি করাই। হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে হোটেলে নিয়ে ভাত খেতে দেই। তবে তার কোনপ্রকার পরিচয় বা নাম-ঠিকানা জানাতে পারেন নি।
এএমএইচ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাষ্টার সরোয়ার আলম জানান, মানসিক ভারসাম্যহীন লোকটির প্রতি আমরা যথেষ্ট সদয় মনোভাব পোষণ করেছি। পুরো দিন জুড়ে আমাদের তত্বাবধানে রেখে তাকে প্রায়ই বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। পুলিশ ভাইয়ের কাছ থেকে আমরা শুধু ঔষধের দাম আর ডাক্তারের ফি নিয়েছি। কোনপ্রকার সীট ভাড়া ও অন্যান্য চার্জ নেয়া হয়নি। তার মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ড্রেসিং শেষে রোগীর চোখের উপর দুই জায়গায় ৭ টির অধিক সেলাই করা হয়। শেষে তাকে ব্যবস্থাপত্র ও দ্রুত সেরে উঠতে ঔষধ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মোঃ সাফায়েত হোছাইন বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। সরকারী সম্পদ ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বজায় রাখাই পুলিশের কর্তব্য। থানার সেকন্ড অফিসার টিপু রায় একজন উদার মনের মানুষ। তার জীবনে অনেক মানবিক দৃষ্টান্তের উদাহরণ রয়েছে। এই মানবতা, নিষ্ঠা পরায়ন ও কর্তব্যের প্রতি অটল পুলিশ কর্মকর্তা টিপু ভবিষ্যতে অনেকদূর এগিয়ে যাবেন বলে আমি আশা করি।

পাঠকের মতামত: